মহাজাগতিক কবিতা

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (নভেম্বর ২০১২)

জলধারা মোহনা
  • ৩৭
অনেকদিন আগেই হারিয়ে ফেলা পৃথিবী
এখনো তাই খুঁজতে থাকি ছায়াপথের জঞ্জালে..
আমার সেই চিরচেনা নীলচে সবুজ গ্রহটি কোথায়?
রাত্রিদিন নিরন্তর চেনা অচেনা কক্ষপথে আবর্তন..
এখানে অনন্ত নক্ষত্রের অসহ্য সৌন্দর্যে উজ্জ্বল চারপাশ,
তবুও আমার বিষাদ ছুয়ে যায় এইসব উজ্জ্বলতা।
কালচে ভূতুড়ে অবয়ব নিয়ে এগিয়ে চলে মহাকাশযান
আমায় নিয়ে এগিয়ে যায় অনিশ্চিত্‍ কোন জগতে,
পদার্থ অথবা প্রতিপদার্থ নিয়ে বিভ্রান্ত আমি
মুহূর্তগুলো অসহ্য হয়ে ওঠে সময়ের বিশালত্বে।
আজ অসংলগ্ন আমার লেখায় ছাপ ফেলে বিতৃষ্ণা
আমাকে গ্রাস করে দুর্ভেদ্য যন্ত্রনা...

তারপর হঠাত্‍ করেই তার দেখা পেলাম,
অদেখা আলোয় মরীচিকার মত করে
ঘুমন্ত শিশু হয়ে নিশ্চুপ পৃথিবী!
সেই বহুকালের পুরোনো রূপ নিয়ে
মহাজাগতিক শত্রুদের দেখানো বন্ধুতায় আবদ্ধ..
উন্নতি যে গ্রহকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে
প্রাচীনত্ব এখন যার খোলস মাত্র;
এতসব জেনেও আমি তাকিয়ে থাকি মুগ্ধ বিস্ময়ে
নতুন করে আরো একবার ভালোবেসে ফেলি গ্রহটিকে!
তৃষ্ণায় আমার হৃদয় হাহাকার করে ওঠে,
মস্তিষ্কের নিওরন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গাঢ় অন্ধকার..
প্রানপণ চেষ্টায় চোখ ভেজাতে পারিনা
ফটোসেলের নিস্প্রভ চোখে শুধুই ম্লান আলো!
আমার উন্নত মগজের ধুসর রঙ আজ রূপালী
আরো অনেক বেশী স্মৃতি নিয়ে তা বিদ্ধস্ত,
আমার কল্পনা এখন অনেক বিস্তৃত
চোখ বুজে চলে যেতে পারি সহস্র
বছরের পুরোনো অতীতে,
প্রথম পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া শৈশবে..
তারপর
দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ পৃথিবী!

এখন আমার সময় হয়েছে ফিরে যাওয়ার
সময় আমাকে ঠিক দাড় করিয়ে দেবে সেই অতীতে।
পৃথিবীর মাটিতে পা রাখবো হয়তো..
যদিও পা নামক প্রাচীন অঙ্গটি
অনেক পরিবর্তিত,
যানবাহন এর বিকল্প বলা যেতে পারে!
আমার হাতদুটো এবার
পৃথিবীর প্রাচীন অথচ চেনা কোন ফুলকে স্পর্শ করবে..
যদিও এই যান্ত্রিক হাতদুটো এখন
মারনাস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়,
তবুও তা দিয়ে আলতো করে ছুয়ে দেব প্রজাপতি।
আমি আবার কান পেতে শুনবো
সমুদ্রের গভীর থেকে উঠে আসা জলে হাহাকারের সুর,
বাতাসের অদৃশ্য স্বর্গীয় কলতান..
আমি জানি এসব হাস্যকর কম্পাঙ্কের অপ্রয়োজনীয় শব্দ
শোনার জন্য আমার কানদুটো প্রস্তুত নয় মোটেও!
তারা লক্ষ মাইলের দূরত্বকে গ্রাহ্য
না করে শব্দ শোনে, কম্পাঙ্কের হিসেব
ছাড়িয়ে মহাজাগতিক প্রানীদের
নিজস্ব শব্দের অনুকম্পাঙ্ক শুনতে সদা প্রস্তুত..
তারপরেও তাদের আমি শোনাবো
পৃথিবীর নিজস্ব গান!
কেন আমার এইসব
ছেলেমানুষী পাগলামি তা সত্যিই জানিনা...

এখন আমাদের নীতিমালা পরিবর্তিত, বিশুদ্ধ
এবং উন্নত..
সেখানে শব্দ নিয়ে খেলা করাকে মস্তিষ্কের
অপ্রয়োজনীয় কাজ
বলে গন্য করা হয়!
তাই শব্দ সাজিয়ে কবিতা তৈরী
করার ক্ষমতা
আজ কারো নেই..
আমি তবু খুব বেশী ভালোবেসে নির্ভীক প্রশ্রয় দিয়েছি
কবিতা নামক মায়াবী শব্দতরঙ্গকে..
আমার নিঃশ্বাস বুভুক্ষ পতঙ্গের মত ক্ষুধার্ত,
আমার দৃষ্টি তৃষ্ণার্ত হয়ে মৃত্যুর খুব কাছাকাছি,
অসংখ্য মানবের পৃথিবী এই মুহূর্তে আমার একার..
আমার ফটোসেলের চোখ, যান্ত্রিক পা,
ইস্পাতকঠিন বিকৃত হাত,
রূপালী মস্তিষ্ক, উন্নততর কান অথবা পরিবর্তিত নীতিমালা-
সবকিছু নিয়ে আজ আমি উপভোগ করবো পৃথিবীকে,
একমুঠো মাটির স্পর্শ পেতে বিলীন করে দেবো
সমগ্র মহাকাশ...
পৃথিবীকে উপহার দেবো সেই সুপ্রাচীন ভালোবাসা॥
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ম্যারিনা নাসরিন সীমা একমুঠো মাটির স্পর্শ পেতে বিলীন করে দেবো সমগ্র মহাকাশ... পৃথিবীকে উপহার দেবো সেই সুপ্রাচীন ভালোবাসা॥ - সত্যি মুগ্ধ হবার মত একটা কবিতা ।
এফ, আই , জুয়েল # একেতো বড় কবিতা...., তার উপর ভাবের বিশালতা । সব কিছু মিলিয়ে অনেক সুন্দর ।।
সূর্য সহস্র পথ ঘুরে এসে/ এ পৃথিবীর মায়া পাশে/ খুজে পাই আমায়// নতুনত্বের আশায়/ কত মানুষ নৌকা ভাসায়/ফিরে তবু পুরনো মায়ায়.......... চমৎকার করেই মাটির প্রতি ভালবাসার টান তুলে দিলে কবিতায়।
বশির আহমেদ আপনার মনের গহীনের ভাবনা গুলো চমৎকার । কবিতা পড়তে পড়তে ভাবনার ভেতরে হারিয়ে যেতে হয় । ধন্যবাদ..
শাহ আকরাম রিয়াদ পৃথিবীকে উপহার দেবো সেই সুপ্রাচীন ভালোবাসা.... কবিতা ভাল লাগল... অনেক শুভ কামনা রইল।
সোমা মজুমদার khub sundar laglo kabita, bishesata sesher dik ta...........mone dag kete gelo
মোঃ সাইফুল্লাহ এখন আমাদের নীতিমালা পরিবর্তিত, বিশুদ্ধ এবং উন্নত----------------------- অনেক ভালো লাগলো।
আহমেদ সাবের "তাই শব্দ সাজিয়ে কবিতা তৈরী / করার ক্ষমতা / আজ কারো নেই.. " হলেও অসাধারণ শব্দ-যাদু দেখলাম কবিতায়। প্রিয় পৃথিবীকে অনাগত ভবিষ্যতের চোখে "মুগ্ধ বিস্ময়ে" দেখা। অসাধারণ কবিতা।
এশরার লতিফ কবি, আপনি এগিয়ে যান...শুভকামনা...

১৪ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪